শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর, বন্যার আশঙ্কা আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ উঁচু জায়গায়

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর, বন্যার আশঙ্কা আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ উঁচু জায়গায়

জেলা প্রতিনিধি,লালমনিরহাট।

ভারতের উত্তর সিকিম এ তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চলে হুহু করে পানি প্রবেশ করছে। বন্যার আশঙ্কা আশঙ্কা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
এ দিকে প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৪ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা চর অঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকায় প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বিকেল ৩ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর ফলে জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলে ইতিমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলেও পানিতে ডুবেছে বাড়িঘর ও রাস্তা ঘাট।

তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে  জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধারগড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিংঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি,রাজপুর,গোকুণ্ডা এসব এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তা পাড়ার রেড এলার্ট শুনে তিস্তা চরের মানুষদে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অনেকে বিভিন্ন স্কুল, উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নির্বাহী অফিসার নাজির হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোকমান হোসেন তিস্তা প্যারাস এলাকায় পরিদর্শনে করেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে নদী এলাকার মানুষকে সচেতন করতে বলেছি। সার্বিক খোজখবর নেওয়া হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন  প্রস্তুত রয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারও বন্যা দেখা দিতে পারে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024 Rangpurtimes24.Com
Developed BY Rafi IT